পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত এবং দোয়া বাংলা উচ্চারণ ২০২৫

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত এবং দোয়া:

নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া রাকআতাই সালাতি ঈদিল ফিতরি মুখাল্লিফান লিল্লাহি তা'আলা, আল্লাহু আকবার।

আরবি নিয়ত:
نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ رَكْعَتَيْ صَلَاةِ عِيدِ الْفِطْرِ مُخَالِفًا لِلَّهِ تَعَالَى، اللهُ أَكْبَرْ।

নামাজের পরের দোয়া (বাংলা উচ্চারণ):
১. সাধারণ দুয়া:
"আল্লাহুম্মা আগহিল ওয়াসতা ওয়াখিরা লানা ওয়ালা মুসরিফিনা।"
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য ঈদের শুরু, মধ্য ও শেষকে বরকতময় করুন এবং যারা অপব্যয় করে তাদের জন্য নয়।)

২. সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা:
(অর্থ: হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম জীবন দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।)

৩. বিশেষ দোয়া:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।"
(অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন।) বিশেষ নোট: ঈদের নামাজের নিয়ত ও দোয়া প্রতিবছর একই থাকে। ২০২৫ সালেও এটি অভিন্ন




বাংলা উচ্চারণে আরবি শব্দগুলো সঠিকভাবে পড়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে স্থানীয় ইমাম বা আলেমের সহায়তা নিন। ঈদুল ফিতরের তারিখ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়। ২০২৫ সালে সম্ভাব্য তারিখ: ৩০ মার্চ বা ৩১ মার্চ (চাঁদ দেখা যাওয়ার উপর ভিত্তি করে)।

ঈদুল ফিতরের নামাজ সুন্নত অনুযায়ী জামাতের সাথে পড়া হয় এবং এতে কোনো আজান বা ইকামত নেই। ঈদের তাকবির ("আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ") নামাজের আগে পাঠ করা হয়। ঈদ মোবারক!

ঈদুল ফিতরের করণীয় নীতি ও উৎসব:

ঈদুল ফিতর হলো রমজান মাসের রোজা শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে উদযাপিত মুসলিমদের প্রধান উৎসব। এ দিনের করণীয় বিষয়গুলো ইসলামি নির্দেশনা ও সুন্নত অনুযায়ী নিম্নরূপ:

১. যাকাতুল ফিতর আদায় করা
রমজান শেষে ঈদের নামাজের আগেই প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর যাকাতুল ফিতর (ফিতরা) আদায় করা ওয়াজিব। এটি গরিব-দুঃখীদের মাঝে বিতরণ করা হয়, যাতে তারাও ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে।

ফিতরার পরিমাণ: স্থানীয় প্রধান খাদ্য (যেমন: গম, চাল, খেজুর) দ্বারা এক "সা'" (প্রায় ৩ কেজি) বা তার মূল্য।

২. ঈদের নামাজ আদায়
ঈদের দিন সকালে দ্বি-রাকাত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি ওয়াজিব বা ফরজে কেফায়া হিসেবে গণ্য হওয়ার বিষয়ে মাজহাবভেদে ভিন্ন মত রয়েছে।

নামাজের আগে নিয়ত, বিশেষ তাকবির ("আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ") পড়া হয়।

নামাজের পর ইমামের খুতবা শোনা সুন্নত, তবে বাধ্যতামূলক নয়।

৩. প্রস্তুতি ও সুন্নত আমল
গোসল করা: ঈদের দিনে গোসল করাকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: নতুন বা সুন্দর পোশাক পরা।

সুগন্ধি ব্যবহার: সুন্নত অনুযায়ী সুগন্ধি লাগানো।

ঈদের আগে খাবার গ্রহণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরে মিষ্টিজাতীয় (যেমন খেজুর) কিছু খেয়ে নামাজে যেতেন।

৪. আনন্দ ও সামাজিকতা
পরিবার-প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ: পরস্পরকে "ঈদ মোবারক" বলে শুভেচ্ছা বিনিময়।

উপহার আদান-প্রদান: বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে উপহার ও মিষ্টি বিতরণ।

সমাজের দুর্বলদের যত্ন: গরিব-অসহায়দের সাহায্য করা ও তাদের সাথে ঈদের খাবার ভাগাভাগি।

৫. আধ্যাত্মিক করণীয়
আল্লাহর শুকরিয়া আদায়: রমজানের রোজা ও ইবাদতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।

ক্ষমা প্রার্থনা: নিজের গুনাহের জন্য তাওবা করা এবং অন্যদের ক্ষমা চাওয়া।

দুআ ও জিকির: ঈদের দিনে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা বিশেষভাবে কবুল হওয়ার সময়।

৬. নিষিদ্ধ বিষয়
রোজা রাখা: ঈদের দিনে রোজা রাখা হারাম।

অসদাচরণ: ঝগড়া-বিবাদ বা অহংকার পরিহার করা।

৭. সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
বিশেষ খাবার প্রস্তুত: স্থানীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী মিষ্টান্ন ও বিশেষ পদ রান্না।

সামাজিক অনুষ্ঠান: মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা শিশুদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন (ইসলামি নীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ)।

গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

ঈদুল ফিতরের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জন, সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় করা এবং সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা। যেকোনো আমল ইখলাস (আন্তরিকতা) সহকারে এবং সুন্নত অনুযায়ী পালন করাই উত্তম।ঈদ মোবারক!


Tags

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Bottom Post Ad

Ads Area