ঈদুল ফিতর পালনের নিয়ম ও ফিতরার পরিমাণ ২০২৫

ঈদুল ফিতর ইসলামের অন্যতম প্রধান উৎসব, যা রমজান মাসের শেষে পালিত হয়। এ উপলক্ষে মুসলিমদের জন্য কিছু ধর্মীয় বিধান ও ফিতরা আদায়ের নিয়ম রয়েছে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ঈদুল ফিতর পালনের নিয়ম:

১. ঈদুল ফিতর পালনের প্রধান নিয়ম
রোজা ভঙ্গ করা: ঈদের দিন সকালে রোজা ভঙ্গ করা সুন্নত। সাধারণত মিষ্টিজাতীয় খাবার (যেমন: খেজুর) দিয়ে রোজা ভাঙা হয় 10।

ঈদের নামাজ আদায়: সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যোদয়ের পর পর্যন্ত ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। এটি জামাতের সাথে মাঠে বা মসজিদে পড়ার রীতি 810। গোসল ও পবিত্রতা: ঈদের দিন গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং নতুন বা পরিষ্কার পোশাক পরা সুন্নত 10।





তাকবির পাঠ: ঈদের নামাজের আগে ঘর থেকে বের হয়ে নামাজগাহে যাওয়ার পথে তাকবির ("আল্লাহু আকবার") পাঠ করা 10।

২. ফিতরার বিধান ও পরিমাণ ২০২৫
ফিতরা (সদাকাতুল ফিতর) হলো ঈদের আগে গরিবদের মাঝে বিতরণকৃত বাধ্যতামূলক দান।

ক. ফিতরা কাদের উপর ওয়াজিব?
যাদের কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ (নিসাব পরিমাণ) রয়েছে, তাদের জন্য ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। নিসাবের পরিমাণ হলো: সাড়ে ৭ ভরি সোনা বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের নগদ অর্থ 815। পরিবারের প্রধানকে নিজের পাশাপাশি নির্ভরশীল সদস্যদের (স্ত্রী, সন্তান, পিতা-মাতা) জন্যও ফিতরা দিতে হয় 910।

খ. ফিতরার পরিমাণ ২০২৫
বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত ফিতরার হার নিম্নরূপ:

ফিতরার পরিমাণ ২০২৫:

পণ্য পরিমাণ টাকা (২০২৫)
গম/আটা ১.৬৫ কেজি ১১০ টাকা
যব ৩.৩ কেজি ৫৩০ টাকা
কিসমিস ৩.৩ কেজি ১,৯৮০ টাকা
খেজুর ৩.৩ কেজি ২,৩১০ টাকা
পনির ৩.৩ কেজি ২,৮০৫ টাকা
সর্বনিম্ন ফিতরা: ১১০ টাকা (গম/আটার ভিত্তিতে) 615।

সর্বোচ্চ ফিতরা: ২,৮০৫ টাকা (পনিরের ভিত্তিতে) 915।

মূল্য নির্ধারণ: স্থানীয় বাজারদর অনুযায়ী পণ্যের মূল্য পরিবর্তন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, উন্নতমানের খেজুরের দাম বেশি হলে ফিতরার পরিমাণও বাড়বে 12।

গ. ফিতরা আদায়ের সময়
উত্তম সময়: ঈদের নামাজের আগে (সাধারণত রমজানের ২৯ বা ৩০ তারিখ থেকে ঈদের সকাল পর্যন্ত) 810। গ্রহণযোগ্য সময়: রমজান শুরু থেকে ঈদের পর পর্যন্ত, তবে ঈদের পর দিলে তা সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হয় 10।

৩. ফিতরা আদায়ের পদ্ধতি
খাদ্য বা নগদ অর্থ: ফিতরা খাদ্যদ্রব্য (যেমন: গম, খেজুর) বা তার নগদ মূল্য হিসেবেও দেওয়া যায়। তবে কিছু আলেম খাদ্য দেওয়াকে উত্তম মনে করেন 1012। বিতরণের নিয়ম: ফিতরা স্থানীয় গরিব, মিসকিন, এতিম বা দাতব্য সংস্থাকে দেওয়া যায় 15।

৪. ফিতরার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য
রোজার ত্রুটি পূরণ: রমজানে সংঘটিত ভুল-ত্রুটির ক্ষমা লাভের মাধ্যম 510। সামাজিক সমতা: দরিদ্রদের ঈদের আনন্দে শরিক করা 515। আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি: উদারতা ও কৃতজ্ঞতার অনুশীলন 512।

৫. বিশেষ নির্দেশনা
উত্তম পদ্ধতি: সামর্থ্য অনুযায়ী উচ্চমূল্যের পণ্য (যেমন: খেজুর) দিয়ে ফিতরা আদায় করা 612।

স্থানীয় মূল্য যাচাই: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশিকা ছাড়াও স্থানীয় বাজারদর অনুসরণ করা যেতে পারে 915। এই বিধানগুলো মেনে ঈদুল ফিতর উদযাপন ও ফিতরা আদায় করলে ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে।
Tags

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Bottom Post Ad

Ads Area